রেশন কার্ড নিয়ে নয়া নিয়মাবলি! না মানলে বন্ধ হবে সমস্ত পরিষেবা – WB Ration Card Update 2025

WB Ration Card Update 2025: অবশেষে নতুন নিয়ম অনুযায়ী দেশের সমস্ত রেশন কার্ডধারীদের জন্য বড় এক ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের তরফে এবার এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে, এবং এই নির্দেশ না মানলে আপনার রেশন কার্ড বাতিল হয়ে যেতে পারে — এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে। এতদিন ধরে বহু মানুষ সরকারি রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে মাসিক খাদ্যসামগ্রী পেয়েই চলেছেন। কিন্তু, একাধিক জাল কার্ড, ভূয়ো দাবিদার এবং অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারের পক্ষ থেকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের কাছে এই নিয়ম মানা এখন অত্যন্ত জরুরি।

এদিকে সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, যাদের রেশন কার্ড এখনো আধারের সঙ্গে যুক্ত হয়নি এবং যাদের ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া এখনো সম্পূর্ণ হয়নি, তারা শীঘ্রই এই কাজটি না করলে রেশন ব্যবস্থার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছেন। শুধু তাই নয়,ইতিমধ্যে কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যে কড়া নজরদারি চালানো শুরু হয়েছে এবং এদিকে একাধিক কার্ড বাতিল করার কাজও এগোচ্ছে। এর ফলে সময় থাকতে এই কাজ সেরে ফেলা জরুরি।

রাজ্য সরকার সকলের জন্য চাকরির ফ্রী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, এখনই সুযোগ নিয়ে ফেলুন – WB Government Free Job Training

ই-কেওয়াইসি, অর্থাৎ ‘ইলেকট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার’ একটি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হতে চলেছে, যা ব্যবহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। রেশন কার্ডের ক্ষেত্রে ই-কেওয়াইসি চালু হওয়ায় সরকারের উদ্দেশ্য হলো প্রকৃত উপভোক্তাদের নির্বাচন করা এবং ভুয়ো কার্ডধারীদের ছাঁটাই করে ফেলা। বহু বছর ধরে রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা সুবিধা পেয়ে চলেছেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থায় অনিয়মের অভিযোগ বারবার উঠে এসেছে। সেই জায়গা থেকেই এবার এই নিয়মকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সরকারের কথা অনুযায়ী, একাধিক মানুষ এখনো পর্যন্ত নিজেদের আধার নম্বর রেশন কার্ডের সঙ্গে যুক্ত করেননি। আবার অনেকেই কেওয়াইসি করেননি, যার ফলে ডেটাবেসে থাকা তথ্যগুলি অসম্পূর্ণ বা ভুলভাবে রেকর্ড হয়ে আছে। এর ফলে রেশন কার্ডের প্রকৃত উপভোক্তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে, এবং বহু অবৈধ নাম রেশন লিস্টে থেকে যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান করতেই এই ই-কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এই ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করার জন্য দু’টি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে— একদিকে অফলাইন পদ্ধতি, অন্যদিকে অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে করতে হবে। শহরাঞ্চলের জন্য অনলাইন পদ্ধতিটি সুবিধাজনক হলেও গ্রামীণ এলাকা বা প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে অফলাইন পদ্ধতি অনেক সহজ হবে।

যদি আপনি অফলাইনের মাধ্যমে ই-কেওয়াইসি করতে চান, তাহলে আপনাকে নিকটবর্তী রেশন ডিলার দোকানে যেতে হবে। সেখানে আধার ও রেশন কার্ডের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে, আপনার আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক তথ্যের মাধ্যমে যাচাইকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এই কাজটি একেবারে বিনামূল্যে এবং তুলনামূলকভাবে দ্রুত সম্পন্ন হয়। তবে যদি কারো বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত সমস্যা থাকে— যেমন আঙুলের ছাপ মেলাতে সমস্যা হয়, তাহলে তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাদ্য দফতরের নির্দিষ্ট কেন্দ্র বা অফিসে গিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

অন্যদিকে, অনলাইন পদ্ধতির সুবিধা হল আপনি বাড়ি বসেই কাজটি করতে পারবেন আপনি । বেশ কিছু রাজ্যের খাদ্য দফতরের ওয়েবসাইটে এখন ই-কেওয়াইসি করার অপশন চালু করা হয়েছে। আপনাকে শুধু www.food.wb.gov.in বা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে লগ ইন করতে হবে। তারপর রেশন কার্ড নম্বর, আধার নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্টার করে, এরপর আসা OTP-এর মাধ্যমে যাচাইকরণ সম্পন্ন করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই OTP না আসা বা সার্ভার সমস্যার কারণে প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হতে পারে, সেক্ষেত্রে পরের দিন বা অন্য সময়ে আবার চেষ্টা করলে সফল হয়ে যাবে।

WB HS পরীক্ষায় বিরাট পরিবর্তন! ২০২৫ সালে এই নতুন নিয়ম জেনেনিন

সরকার ইতিমধ্যে যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা একেবারে চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। কিছু রাজ্যে এই সময়সীমা ইতিমধ্যেই পার হয়ে গেছে এবংআর কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। অন্যদিকে যেসব রাজ্যে এখনো সময় আছে, সেখানে আগামী কিছু দিনের মধ্যেই শেষ তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই সময় থাকতে ই-কেওয়াইসি না করালে আপনি এবং আপনার পরিবারের বাকি সদস্যরা আগামী দিনে রেশন ব্যবস্থার অধিকার হারাতে পারেন বলে জানা যায় ।

এবার প্রশ্ন উঠছে, যদি রেশন কার্ড বাতিল হয়ে যায়, তাহলে কী হবে? যেহেতু রেশন কার্ড শুধু খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার জন্যই নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্র হিসেবেও বিবেচিত হয়ে থাকে— বিশেষ করে গ্রামীণ বা শহরতলির বহু মানুষের ক্ষেত্রে। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে রেশন কার্ডের ভিত্তিতে উপভোক্তা নির্বাচন করা হয়। তাই রেশন কার্ড বাতিল মানে কেবল খাদ্য নয়, বরং আরও বহু সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব হলো এই ই-কেওয়াইসি দ্রুত সম্পন্ন করা।

এদিকে সরকারের এই পদক্ষেপ অনেকেই সমর্থন করছেন, কারণ বহু বছর ধরে সাধারণ মানুষের করের টাকায় যে রেশন বা খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়, তা অবৈধভাবে পেতে বহুজন ভুয়ো কার্ড বানিয়ে রেখেছে এমনটাই জানা গিয়েছিল। একসময় এই জালিয়াতি বন্ধ করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা পুরোপুরি সফল হয়নি। এবার আধার ভিত্তিক কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক করায় অনেকটাই স্বচ্ছতা আসবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

যাঁরা এখনো ভাবছেন সময় আছে, পরে করব— তাদের জন্য সতর্কবার্তা জানি করা হয়েছে: এই প্রক্রিয়া শেষ না হলে আপনার রেশন কার্ড বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে অন্য কোনো স্কিমেও নাম তোলার সময় সমস্যা হতে পারে, কারণ সরকার এখন একাধিক সুবিধার ক্ষেত্রে ই-কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক করে দিচ্ছে।

সবশেষে বলা যায় যে , এখন আর অবহেলার সময় নেই। আপনার এবং পরিবারের স্বার্থে আজই রেশন কার্ডের ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করে ফেলুন অথবা একেওয়াইসি আছে কিনা তার জন্য নিকটবর্তী রেশন ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশ পালন করার বিষয় নয়, বরং আপনাদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত রাখারও অংশও বটে। ঠিক সময়মতো এই ছোট কাজটি আপনাকে ভবিষ্যতের বড় সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। দেশের খাদ্য সুরক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে এই ধরনের নিয়ম জারি করা সরকারের তরফে এক সময়োপযোগী পদক্ষেপ হতে পারে, আর তার যথাযথ প্রয়োগ আপনার হাতেই রয়েছে।

Leave a Comment