Indian Citizenship Prove: আমরা সকলে জানি, ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচন। তার ঠিক আগে বিহারে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা ভোট। সেই নির্বাচনকে ঘিরেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন গোটা দেশের ভোটার তালিকায় “Special Intensive Revision (SIR)” কর্মসূচি চালু করতে শুরু করেছে। এই কর্মসূচির অধীনে দেশের প্রতিটি ঘরে গিয়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করছেন নির্বাচন কমিশনের বিএলআরও গন। বিশেষ করে যাঁরা এখনও ভোটার তালিকায় নাম তোলেননি কিংবা নতুন ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত হতে চাই, তাঁদের জন্য এই বিশেষ অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু এরই মধ্যে উঠে এসেছে একটি বড় সমস্যার কথা—আমাদের অনেকেই সঠিকভাবে জানি না, কোন কোন নথির মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যায়।
সম্পর্কিত পোস্ট
সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর! অগাস্ট মাসে টানা ছুটি, দেখেনিন ছুটির লিস্ট - August Holiday Listযদিও ভারতীয় বাসিন্দাদের কাছে বহু ধরনের জাতীয় সংশায় পত্র রয়েছে তবে ভারতীয় বাসিন্দারা এখন একটা সমস্যার মুখে যে কোনটি ডকুমেন্ট থাকলে সে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে। যেহেতু বর্তমানে ভারতীয় বিভিন্ন কার্যকলাপ স্কিম কিংবা অন্যান্য সুবিধা নিতে আধার কার্ড ভোটার কার্ড রেশন কার্ড কিংবা জন্ম প্রমাণ পত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু এদের মধ্যে কোনটি থাকলে এসে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে অথবা অন্য কোন ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে নাকি এ নিয়ে নানা সংশয় রয়েছে তাদের মধ্যেই। আজকের প্রতিবেদনে আমরা এই সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেব।
১. জন্ম শংসাপত্র
যদি আপনার কাছে জন্ম বার্থ সার্টিফিকেট থাকে, তাহলে তা আপনার ভারতীয় নাগরিকত্বের অন্যতম নির্ভরযোগ্য প্রমাণপত্র হতে চলেছে এটি। যদিও জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকত্ব প্রমাণ সংযুক্ত থাকে – অর্থাৎ, আপনি যদি ভারতের ভূখণ্ডে জন্মগ্রহণ করে থাকেন এবং সেই সম্পর্কিত স্বীকৃত জন্ম সার্টিফিকেট থেকে থাকে, তাহলে সেটি আপনার নাগরিকত্ব প্রমাণে অত্যন্ত কার্যকর ডকুমেন্ট হতে চলেছে। সরকারি বা স্বীকৃত হাসপাতালে জন্মের সময় জারি হওয়া জন্ম সার্টিফিকেট বা পৌরসভা/গ্রাম পঞ্চায়েত দ্বারা অনুমোদিত জন্ম সার্টিফিকেট এই ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে।
ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, যাঁদের জন্ম তারিখ ২০০৪ সালের আগে, তাঁদের নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে জন্ম সার্টিফিকেটের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিশেষ করে যখন নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ মধ্যে রয়েছে, তখন এই নথিটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
২. ভারতীয় পাসপোর্ট
ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের অধীনে পাসপোর্ট জারি করা হয়ে থাকে। এবং সেই পাসপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে, ওই ব্যক্তি একজন ভারতীয় নাগরিক ( Indian Citizenship)। অর্থাৎ, যদি এমন কারও কাছে বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট থাকে, তাহলে সেটি সরাসরি নাগরিকত্বের নিশ্চিত প্রমাণ হবে। ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হলে এই পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে অনায়াসে। তবে শর্ত একটাই – পাসপোর্টটি আপডেট এবং বৈধ হতে হবে, এক্ষেত্রে পুরনো বা বাতিল করা পাসপোর্ট গ্রহণযোগ্য হবে না।
এছাড়াও, আধুনিক পাসপোর্টে যেমন ব্যক্তিগত বিবরণ দিয়ে থাকে, তেমনই জন্মস্থান ও নাগরিকত্ব সম্পর্কিত তথ্যও অন্তর্ভুক্ত থেকে থাকে, যা এই নথিটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
৩. জাতীয়তা শংসাপত্র (Nationality Certificate)
এটি সাধারণত রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বানানো হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে জেলাশাসক বা জেলা স্তরের আধিকারিকরাও এই শংসাপত্র জারিও করে থাকেন। তবে জাতীয়তা শংসাপত্র সাধারণত তাঁরা পান, যাঁরা কিছু নির্দিষ্ট শর্তে নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন বা যাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয় রয়েছে, এবং সেটির সমাধান ইতিমধ্যে হয়েছে বা করতে হবে।
বিশেষ করে যাঁদের জন্ম ভারতের বাইরে, কিন্তু পিতামাতার ভারতীয় নাগরিকত্বের ভিত্তিতে তাঁরা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে দাবি করেন, তাঁদের জন্য এই শংসাপত্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। বর্তমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে এই নথির মূল্য অনেক বেড়ে গেছে বলে জানা গিয়েছে। নানা সময়ে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে, নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে এই শংসাপত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
৪. নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট / রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনের ধারা ৫ এবং ৬ অনুসারে, যেসব বিদেশি নাগরিক পরবর্তীকালে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করে থাকেন, তাঁদের জন্য এই সার্টিফিকেট অবশ্যই থাকতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে এই নাগরিকত্ব দেওয়া হয়ে থাকে, তবে নির্দিষ্ট শর্তপূরণ সাপেক্ষে। যেমন, নির্ধারিত সময় ধরে ভারতে বসবাস, বৈধ ভিসা, নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ এবং পরিচয় যাচাইয়ের পর এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
বিশেষ করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা মায়ানমার থেকে আসা শরণার্থী বা অভিবাসী যাঁরা বৈধ উপায়ে ইতিমধ্যে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন, তাঁদের জন্য এটি একমাত্র নির্ভরযোগ্য নথি হতে পারে। এই সার্টিফিকেট থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবৈধ অভিবাসী বলা যাবে না এবং তিনি সমস্ত নাগরিক সুবিধা পেয়ে যাবেন।
এই চারটি নথির যেকোনো একটি থাকলেই আপনি প্রাথমিকভাবে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পারেন। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই নথিটি বৈধ হতে হবে, হালনাগাদ এবং সরকারি অনুমোদিত থাকতে হবে। নির্বাচনের প্রাক্কালে যখন ভোটার তালিকা নিয়ে সারা দেশে বিশেষ পর্যালোচনা চলছে এবং বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন, তখন আপনার নাগরিকত্বের প্রমাণ থাকা অত্যন্ত জরুরি বিষয় হয়ে দাড়ায়।
এদিকে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিহার রাজ্যের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এবং সেই তালিকায় কোনও অবৈধ অভিবাসীর নাম থাকবে না—এমনটাই স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। এর ফলে নাগরিক হিসেবে নিজের নাম তালিকায় রাখতে হলে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে আপনাকে। ভুলভ্রান্তি থাকলে তা সংশোধন করতে হবে।
তবে সাম্প্রতিক নির্দেশিকা অনুযায়ী, আধার বা রেশন কার্ড অনেক সময় নির্বাচনী উদ্দেশ্যে গৃহীত হলেও, সেগুলি নাগরিকত্বের একক প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে না। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র পরিচয়পত্র বা ঠিকানার নথি দিয়ে নাগরিকত্ব নির্ধারণ সম্ভব হনে না। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আর গাফিলতি করা চলবে না।
আরও পড়ুন
১০ ভবিষ্যৎ মুখি ব্যবসার আইডিয়া! আয় মাসিক ৩ লাখেরও বেশি, তাড়াতাড়ি দেখেনিন - Future 10 Business Idea
NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.