Gas Agency Business Idea: বর্তমানে ব্যবসা কমবেশি সকলেই শুরু করতে চাই কিন্তু যদি হয় নামি-দামি কোম্পানির সঙ্গে তাহলে তো আর কথায় নেই। কেননা এই সংক্রান্ত ব্যবসাতে সাফল্য ১০০ শতাংশ থাকে।এমনি নিশ্চিত আয় করা সম্ভব। তাহলে আর দেরি না করে বিস্তারিত জেনে নিন।
বর্তমান সময়ে যখন মানুষ নিরাপদ, লাভজনক এবং সরকারি সমর্থিত ব্যবসার সন্ধান করে থাকে, তখন এলপিজি গ্যাস এজেন্সি (LPG Gas Agency) একটি আকর্ষণীয় ও স্থিতিশীল ব্যবসায়িক বিকল্প হিসেবে সামনে এসে থাকে। আমরা জানি যে, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার পর গ্যাস সংযোগের চাহিদা বেড়েছে বহু গুণে, যা এই ব্যবসার জন্য বিশাল সম্ভাবনার দরজাও খুলে দিয়েছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
পড়াশোনার পাশাপাশি সাইড ইনকাম মাসে 20 হাজারের বেশি! ৩ টিপস দেখুন এখনই - Income Tips for studentsএকটি বিশাল বাজার: ভারতের গ্যাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা
২০২৫ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত, ভারতে ৩৩.৫২ কোটির বেশি অ্যাক্টিভ এলপিজি সংযোগ সংখ্যা দাড়িয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যায় দেশের প্রায় প্রতিটি ঘরে গ্যাসের ব্যবহার রয়েছে এবং প্রতিদিনই এই চাহিদা বেড়েই চলেছে। তাই এলপিজি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা একটি স্থায়ী ও প্রয়োজনভিত্তিক ব্যবসা হতে চলেছে আপনার জন্য।
প্রতি সিলিন্ডারে কত আয় হয়?
গ্যাস এজেন্সি থেকে মূলত কমিশনের মাধ্যমে আয় হয়ে থাকে, যা প্রতি সিলিন্ডার বিক্রির ভিত্তিতে নির্ধারিত:
- ১৪.২ কেজি ঘরোয়া সিলিন্ডার: প্রতি ইউনিটে প্রায় ₹৭৩.০৮ কমিশন থাকে। এর মধ্যে ₹৩৯.৬৫ হলো স্থাপন খরচ হিসেবে এবং ₹৩৩.৪৩ ডেলিভারি চার্জ হিসেবে।
- ৫ কেজি সিলিন্ডার: প্রতি ইউনিটে প্রায় ₹৩৬.৫৪ কমিশন দেওয়া হয়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি একটি গ্যাস এজেন্সি মাসে ৩০০০ ইউনিট ১৪.২ কেজি সিলিন্ডার বিক্রি করে থাকেন, তাহলে এক মাসে কেবল কমিশন থেকেই প্রায় ₹২.১৯ লক্ষ পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
অতিরিক্ত আয়ের উৎস
এই কমিশনের বাইরেও এজেন্সি আরও কিছু উপায়ে আয় করার সুযোগ থাকে:
- নতুন সংযোগ ইস্যু করলে আয় হয়
- গ্যাস চুলা, লাইটার, পাইপ বিক্রি করার ফলে
- বাণিজ্যিক সিলিন্ডার সরবরাহ করা
- AMC বা সার্ভিস চার্জ সংগ্রহ করলে
গ্যাস এজেন্সি শুরু করতে কত খরচ পড়ে?
একটি গ্যাস এজেন্সি শুরু করতে প্রাথমিকভাবে ₹১৫ লক্ষ থেকে ₹৩০ লক্ষ পর্যন্ত ইনভেস্ট করতে হতে পারে , যা নির্ভর করে আপনি গ্রামীণ, আধা-শহর না বড় শহুরে এলাকা কোথায় ব্যবসা করছেন তার উপর ভিত্তি করে। তবে এই বিনিয়োগকে ভবিষ্যতের মুনাফার ভিত্তি হিসেবে দেখা উচিত।
যেখানে টাকা খরচ হবে:
- সিকিউরিটি ডিপোজিট: তেল কোম্পানির কাছে ফেরতযোগ্য অগ্রিম জমা দিতে হয়ে থাকে।
- গুদাম ও অফিস: নিরাপদভাবে সিলিন্ডার সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত আয়তনের জমি থাকা বাধ্যতামূলক এখানে।
- ডেলিভারি গাড়ি: গ্রাহকদের কাছে হোম ডেলিভারির জন্য ট্রাক বা পিকআপ ভ্যান প্রয়োজন হয়।
- অফিস সেটআপ: কম্পিউটার, প্রিন্টার, বিলিং সফটওয়্যার, ফায়ার সেফটি ইত্যাদি থাকতে হবে।
ব্যাংক লোন পাওয়ার সুবিধা
ব্যবসা শুরু করার জন্য পুরো টাকা নিজের পকেট থেকে খরচ না করলেই চলবে। অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক সহজ শর্তে গ্যাস এজেন্সি খোলার জন্য ঋণ দিয়ে থাকে।
কে কে গ্যাস এজেন্সি নিতে পারবেন?
ডিলারশিপের জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা দরকার:
- ভারতীয় নাগরিক হওয়া দরকার
- বয়স ২১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে থাকতে হবে
- কমপক্ষে দশম শ্রেণি পাশ যোগ্যতা থাকতে হবে
- পরিবারের যে কেউই অন্য অয়েল মার্কেটিং কোম্পানির কর্মচারী হতে পারবে না
- শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে
বিশেষ কোটা ও সুযোগ:
SC, ST, এক্স-সার্ভিসম্যান, খেলোয়াড়, মহিলাদের জন্য বিশেষ রিজার্ভেশন ও অগ্রাধিকার থাকে এখানে।
গ্যাস এজেন্সি পাওয়ার ধাপসমূহ (Step-by-Step গাইড)
১. বিজ্ঞপ্তির দিকে লক্ষ্য রাখুন:
IOCL (Indane), BPCL (Bharat Gas), HPCL (HP Gas) – এই তিনটি সংস্থা নতুন এজেন্সি দেওয়ার সময় সংবাদপত্র ও তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন দেখুন। সব বিজ্ঞাপন এক জায়গায় পাওয়া যায়: lpgvitarakchayan.in পোর্টালে।
২. অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও আবেদন করুন:
যদি আপনার এলাকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে থাকে, তবে আপনাকে ওই পোর্টালে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রে আপনার ব্যাক্তিগত, শিক্ষাগত, আর্থিক তথ্য পূরণ করে জমা দিতে হবে।
৩. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও ফি জমা দিন:
- ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে
- অনারফান্ডেবল ফি অনলাইনে পেমেন্ট করতে হবে
৪. লাকি ড্র ও যাচাই প্রক্রিয়া:
একই স্থানের জন্য একাধিক আবেদন থাকলে স্বচ্ছভাবে কম্পিউটারাইজড লটারির মাধ্যমে একজনকে নির্বাচন করা হয়ে থাকে। নির্বাচিত ব্যক্তির সমস্ত তথ্য যাচাইয়ের পর Letter of Intent ইস্যু করা হয়ে থাকে। তারপর আপনি এজেন্সি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করতে পারেন।
সরকারি ও বেসরকারি গ্যাস কোম্পানির পার্থক্য
সরকারি সংস্থার পাশাপাশি SHIVGAS, Supergas, Indira Gas-এর মতো বেসরকারি সংস্থাও ডিলারশিপ অফার দিয়ে থাকেন। তবে তাদের শর্ত ও বিনিয়োগ পদ্ধতি কিছুটা আলাদা। তাই বিস্তারিত জেনে তারপর পদক্ষেপ নিবেন
পরিশেষে বলা যায়, গ্যাস এজেন্সি ব্যবসা কেবল একটি আয়ের উৎস হিসেবে গণ্য হবে না, এটি একটি দায়িত্বপূর্ণ পেশা যা মানুষের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে সরকারি সহায়তা, স্থিতিশীল গ্রাহকবেস এবং নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা থাকে। আপনি যদি সৎ, পরিশ্রমী এবং দায়িত্ববান হন, তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার ভবিষ্যত উজ্জ্বল করতে পারে।
প্রশ্নোত্তর (FAQs) দেখুন
১. গ্যাস এজেন্সির ধরন কতগুলো?
উত্তর: প্রধানত চার ধরনের জায়গা যেমন – শহুরে, আধা-শহুরে (রুরবান), গ্রামীণ এবং দুর্গম অঞ্চলের এজেন্সি।
২. সরকারি গ্যাস ডিলারশিপের জন্য অফিশিয়াল ওয়েবসাইট কী?
উত্তর: lpgvitarakchayan.in থেকে জানতে পারেন
৩. গুদামের জমি নিজের হতে হবে কি?
উত্তর: এরকম না,এই জমি নিজের অথবা দীর্ঘমেয়াদী লিজে থাকতে হবে।
৪. একই পরিবারের একাধিক সদস্য আবেদন করতে পারবেন?
উত্তর: না, একটি পরিবার থেকে কেবল একজনই আবেদন জানাতে পারবেন।
৫. প্রাইভেট কোম্পানির গ্যাস এজেন্সি কি নেওয়া যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, SHIVGAS বা Indira Gas-এর মতো সংস্থাও ডিলারশিপ অফার করে।

NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.