Notebook Business Idea: আজকে এমন একটি ব্যবসার খোঁজ নিয়ে এসেছি যার মাধ্যমে আপনি মাসে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এজন্য আপনাকে বেশি কিছু করতে হবে না শুধুমাত্র একটি মেশিন কিনলে সেই মেশিন দিয়ে প্রতিদিন আয় করতে পারবেন হাজার হাজার টাকা। আর আপনার তৈরি জিনিসপত্র প্রতিনিয়ত বাজারে ব্যাপক হারে বিক্রি হয়ে থাকে। তাহলে এই বিজনেস স্টার্ট করলে আপনি অতি সহজেই লাখপতি হতে পারবেন। আসুন তাহলে আজকের প্রতিবেদনে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক –
ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কম বিনিয়োগে ভালো আয় করার মতো ব্যবসার সন্ধান পাওয়া অনেকের জন্যই চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছপ। এমন একটি ব্যবসার কথা আজ আপনাকে জানাচ্ছি , যেখানে প্রোডাক্ট বা মেশিনটি নতুন নয়, কিন্তু ব্যবসার মডেল নতুন ও অভিনব। একটি মেশিন ব্যবহার করেই সহজে মাসে সাড়ে এক লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
সম্পর্কিত পোস্ট
পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা, সরকার দিচ্ছে ৫০ হাজার থেকে ৯ লাখ লোন! শুরু করুন এখনই - Poultry Farm Business Ideaকেন নোটবুক ব্যবসা লাভজনক
শহর থেকে গ্রাম—সব জায়গাতেই পড়াশোনার জন্য এই জিনিসের প্রয়োজন ব্যাপক। স্কুল, কলেজ, কোচিং—সবখানেই নোটবুক ব্যবহৃত হয়ে থেকে। বলপেনের বাজারে বড় বড় ব্র্যান্ডের দাপট থাকলেও নোটবুক ব্যবসায় এখনো অনেক বড় সুযোগ রয়েছে। যদি সঠিক কৌশলে শুরু করা যায়, তবে এই ব্যবসা দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী আয় এনে দিতে পারে আপনার জীবনে বিরাট সাফল্য-
এই ব্যবসার অভিনব মডেল: রদ্দি কাগজের বিনিময়ে নোটবুক
এই ব্যবসার সাফল্যের মূল রহস্য হলো এর ইউনিক অফার । এর জন্য অনলাইনে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে, যেখানে গ্রাহকরা অর্ডার করতে পারবেন। বিশেষ অফার হিসেবে গ্রাহকের বাড়ি থেকে পুরনো খবরের কাগজ, পুরনো বই বা খাতা সংগ্রহ করে তার বিনিময়ে নতুন নোটবুক দিয়ে অতি সহজেই সাফল্য পেতে পারেন।
এই কৌশলে—
- গ্রাহকের জন্য লাভজনক, কারণ পুরনো কাগজের বদলে নতুন নোটবুক পাওয়া যাচ্ছে।
- ব্যবসায়ীর জন্য লাভজনক, কারণ রদ্দি কাগজ বিক্রি করেই আলাদা আয় হবে এবং গ্রাহকের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক তৈরি হয়ে থাকে।
রদ্দি কেনার কৌশল: বাজার দরের চেয়ে বেশি
বর্তমানে বাজারে রদ্দির যে দাম চলছে, তার চেয়ে প্রতি কিলো ২ টাকা বেশি দাম দিয়ে রদ্দি কেনা হয়ে থাকবে। এতে গ্রাহকের আগ্রহ আরও বাড়বে। এমনকি এই বাড়তি দামে কিনেও ব্যবসায়ী লাভে থাকবেন ভালোই, কারণ নোটবুকের মূল বিক্রি থেকে বড় মার্জিন পাওয়া সম্ভব।
রিটেইলার ছাড়াই সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো
অনেক ব্যবসায় রিটেইলারের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে, কিন্তু নোটবুক ব্যবসায় সরাসরি গ্রাহকের কাছে (Direct-to-Consumer) ডেলিভারি করলেই ভালো লাভ হতে পারে। এতে পণ্যের MRP-তে বিক্রি সম্ভব, পাশাপাশি গ্রাহকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে থাকবেন।
মেশিনের ধরন ও দাম
নোটবুক তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরণের মেশিন পাওয়া যায়:
- ম্যানুয়াল মেশিন: দেড় লাখ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় এই মেশিন, স্টার্টআপের জন্য আদর্শ হতে চলেছে।
- সেমি-অটোমেটিক মেশিন: প্রায় ৫ লাখ টাকায় পাওয়া যেতে পারে, দৈনিক ৩,০০০–৫,০০০ নোটবুক উৎপাদনের ক্ষমতা ভালো।
- হাই-এন্ড অটো মেশিন: ১৫ লাখ টাকার কাছাকাছি, বড় উৎপাদনের জন্য ভালো হবে।
তবে শুরুতে ম্যানুয়াল বা সেমি-অটোমেটিক মেশিনই যথেষ্ট।
মেশিন কেনার সময় যা খেয়াল রাখতে হবে
- দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি
- মেশিনের অটোমেশন লেভেল
- স্পেয়ার পার্টস ও সার্ভিস সাপোর্ট
- বিদ্যুৎ খরচ ও অপারেটরের প্রয়োজনীয়তা
- ওয়ারেন্টি ও ট্রেনিং সুবিধা থাকছে
কারা এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন
কলেজ শিক্ষার্থীরা
কলেজের পড়াশোনার পাশাপাশি এই ব্যবসা সহজেই চালানো সম্ভব। গ্রাহকের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী হওয়ায়, কলেজ গেটেই ডেলিভারি দিয়ে বিক্রি বাড়ানো সম্ভব হবে।
গৃহিণীরা
বড় কথা হলো, গৃহিণীরা ঘরে বসেই এই ব্যবসা চালাতে পারেন। বিক্রির সময় মহিলারা মহিলাদের সাথে বেশি কথা বলতে পারেন, যা দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করে।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা
এক্ষেত্রে পেনশনের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিনিয়োগ করে বড় পরিসরে এই ব্যবসা করতে পারেন। সেমি-অটোমেটিক মেশিন দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে হাই-এন্ড মেশিনে আপগ্রেড করা সম্ভব।
খরচ ও লাভের হিসাব
একটি নোটবুক তৈরির গড় খরচ:
- কাঁচামাল: ₹8.50
- বিদ্যুৎ, শ্রম ও মেইনটেন্যান্স: ₹1.30
মোট: ₹9.80 (সর্বোচ্চ ₹10)
সাধারণত বাজারে একটি নোটবুক ₹25-এ বিক্রি হয়। যদি ₹20-এ বিক্রি করা হয়, তবুও প্রতি নোটবুকে ₹10 লাভ হবে।
উদাহরণ স্বরুপ :
প্রতিদিন ৫০০ নোটবুক বিক্রি করলে→ দৈনিক আয় ₹৫,০০০ → মাসে ₹১,৫০,০০০ লাভ।
রদ্দি কাগজ বিক্রির টাকা দিয়ে পরিবহন খরচ মেটানো শেষ হবে, ফলে নোটবুক বিক্রির পুরো টাকাই নেট প্রফিট হিসেবে থেকে যাবে।
বাজার বিস্তারের সুযোগ
এক্ষেত্রে প্রথমে নিজের শহরে বিক্রি শুরু করে ধীরে ধীরে আশেপাশের শহরে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। এর জন্য কেবল একটি গুদাম এবং পরিবহন ব্যবস্থা প্রয়োজন রয়েছে। উৎপাদন বেড়ে গেলে হাই-এন্ড অটোমেটিক মেশিন ব্যবহার করে উৎপাদন ক্ষমতা আরও বাড়ানো সম্ভব হবে।
সাফল্যের টিপস
- পণ্যের মান বজায় রাখতে হবে
- সময়মতো ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে
- গ্রাহকের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়া
- অনলাইন অর্ডার সিস্টেম চালু রাখা
- সোশ্যাল মিডিয়া ও স্থানীয় প্রচার ব্যবহার করা
মাত্র দেড় লাখ টাকার পুঁজি খাটিয়ে নোটবুক উৎপাদনের এই ব্যবসা যে কেউ শুরু করতে পারেন। অভিনব “রদ্দি কাগজের বিনিময়ে নোটবুক” মডেল গ্রাহক টানার পাশাপাশি বাড়তি আয়ও এনে দেবে। কম খরচে উচ্চ মুনাফা, সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা এবং বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরন—সব মিলিয়ে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক ব্যবসা হতে চলেছে।

NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.