School Open Book Exam Rule: দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে একই পদ্ধতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত হচ্ছিল। ঠিক এ সময় শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিরাট পরিবর্তনের মুখে রয়েছে শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষা দপ্তর কর্তৃক আগামী পরীক্ষাগুলিতে খোলা বয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে চলেছে এমনটাই জানা যাচ্ছে। জানা যায় আগামী বছর অর্থাৎ 2026 সাল থেকে এই পদ্ধতি শুরু হতে চলেছে। তবে এই পরীক্ষা আপাতত কোন শ্রেণীর জন্য চালু করা হচ্ছে সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
যদিও গোটা দেশ জুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। মুখস্থ নির্ভর পড়াশোনার বদলে এখন জোর দেওয়া হচ্ছে বিশ্লেষণী দক্ষতা, যুক্তি প্রয়োগ এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে। এই ধারায়, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট চালু করার ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপ জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP) ২০২০ এবং ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর স্কুল এডুকেশন (NCFSE) ২০২৩-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বলে জানানো হয়েছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
নাগরিকত্বের জন্য স্মার্ট কার্ড, একটাই যথেষ্ট! জল্পনা, সম্ভাবনা ও বাস্তবতা - Indian Smart Citizenship Cardওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট কী?
সাধারণত ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট এমন একটি পরীক্ষা পদ্ধতি যেখানে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার সময় পাঠ্যবই, ক্লাস নোট বা নির্দিষ্ট রেফারেন্স বই ব্যবহার করে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
এটি কেবল তথ্য মুখস্থ করার পরিবর্তে, সেই তথ্যের প্রাসঙ্গিক প্রয়োগ এবং যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করার দক্ষতাকে যাচাই করবে।
এর মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো:
- মুখস্থ বিদ্যার উপর নির্ভরতা কমানো যাবে
- সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি পাবে
- তথ্যের সঠিক প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করবে
- বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে জ্ঞান ব্যবহার করবে
কেন এই পরিবর্তন জরুরি?
আমরা সকলে জানি, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় পরীক্ষার ফলাফল অনেকটাই মুখস্থ করার ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল রয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের গভীরে যেতে পারে না এবং এমনকি বিশ্লেষণী দক্ষতাও গড়ে ওঠে না।
ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট শিক্ষার্থীদেরকে শুধু উত্তর মুখস্থ করার পরিবর্তে, বিষয়বস্তুকে গভীর ভাবে বোঝা, বিশ্লেষণ করা এবং প্রয়োগ করার দিকে উৎসাহিত করে থাকবে।
কোন কোন বিষয়ে হবে ওপেন-বুক পরীক্ষা?
CBSE-এর পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি টার্মের লিখিত পরীক্ষায় নিচের মূল বিষয়গুলিতে ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হবে:
বিষয় সমূহ | পরীক্ষার ধরণ | ক্লাস |
---|---|---|
ভাষা | ওপেন-বুক | ৯ম |
গণিত | ওপেন-বুক | ৯ম |
বিজ্ঞান | ওপেন-বুক | ৯ম |
সামাজিক বিজ্ঞান | ওপেন-বুক | ৯ম |
পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা
গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে CBSE নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কিছু স্কুলে ওপেন-বুক পরীক্ষার পাইলট প্রকল্প চালু করেছিলেন। ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়:
- এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ১২% থেকে ৪৭%-এর মধ্যে।
- অনেকে সঠিক রেফারেন্স খুঁজে পেতে এবং ধারণা প্রয়োগে সমস্যায় পড়েছিলেন তারা।
- তবুও শিক্ষকরা এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন এবং মনে করেন, সঠিক প্রশিক্ষণ দিলে এটি সফল হতে পারে খুব কম সময়ে।
অতীতের অভিজ্ঞতা
যদিও গত ২০১৪ সালে CBSE ‘ওপেন টেক্সট বেসড অ্যাসেসমেন্ট’ (OTBA) চালু করেছিল নবম ও একাদশ শ্রেণিতে। কিন্তু ২০১৭-১৮ সালে তা বন্ধ হয়ে যায় কারণ প্রত্যাশিতভাবে সমালোচনামূলক দক্ষতা বৃদ্ধি পায়নি এতে।
এবারের উদ্যোগে বোর্ড পরিকল্পনা করছে মানসম্মত প্রশ্নপত্র তৈরি করবে, যাতে প্রশ্ন কেবল বই দেখে লেখা নয়, বরং বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা
জানা যায়, ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট শিক্ষার্থীদের জন্য নানা দিক থেকে উপকারী হতে পারে:
- চাপ কমবে – এর ফলে মুখস্থ করার চাপ হ্রাস পাবে।
- বাস্তবমুখী শিক্ষা – বাস্তব পরিস্থিতিতে জ্ঞান ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।
- সমালোচনামূলক চিন্তা – সমস্যার সমাধান বের করার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
- শিক্ষার গভীরতা – বিষয়বস্তুর গভীরে গিয়ে বোঝার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
যদিও এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, কিছু চ্যালেঞ্জও অবশ্যই থাকবে:
- পরীক্ষার সময় রেফারেন্স ম্যানেজ করা শেখা জানতে হবে
- আর বই দেখে দ্রুত উত্তর লিখতে পারার দক্ষতা তৈরি করা।
- শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জন্য নতুন ফরম্যাটে অভ্যস্ত হতে হবে ।
- প্রশ্নপত্রের মান বজায় রাখতে হবে।
শিক্ষকদের ভূমিকা
এখানে শিক্ষকরা এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। তাদের দায়িত্ব হবে:
- শিক্ষার্থীদের রেফারেন্স ব্যবহার করার কৌশল শেখাতে হবে।
- প্রয়োগমুখী প্রশ্নের অনুশীলন করাতে হবে।
- সমালোচনামূলক চিন্তা এবং বিশ্লেষণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
পরীক্ষার ধরনে পরিবর্তন
CBSE বোর্ড পরিকল্পনা করছে এমন প্রশ্ন তৈরি করতে যা শুধু বই থেকে কপি করে লেখা যাবে না।
প্রশ্নগুলো হবে:
- কনসেপ্ট-ভিত্তিক
- বিশ্লেষণধর্মী
- বাস্তব জীবনের উদাহরণ সংযুক্ত
- তুলনামূলক এবং যুক্তিভিত্তিক
অভিভাবকদের ভূমিকা কী
অবশ্যই অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের শুধু নম্বরের দিকে না তাকিয়ে শেখার প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দেওয়া। তারা সন্তানদের উৎসাহ দিতে পারেন বিভিন্ন রিসোর্স পড়তে এবং বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিতে।
আগাম প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত?
এই সময় শিক্ষার্থীদের এখন থেকেই কিছু অভ্যাস তৈরি করা দরকার:
- ক্লাস নোট এবং বই নিয়মিত পড়ার অভ্যাস।
- মূল ধারণাগুলি চিহ্নিত করার দক্ষতা বৃদ্ধি
- উদাহরণের মাধ্যমে শেখানো
- অনুশীলন পরীক্ষায় রেফারেন্স ব্যবহার করার অভ্যাস।
ভবিষ্যতের এর প্রভাব
বলা হয়, এই পদ্ধতি সফল হলে শুধু CBSE নয়, দেশের অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডও এটি গ্রহণ করতে পারেন। এর ফলে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা মুখস্থ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে দক্ষতাভিত্তিক হয়ে উঠবে।
তাই এ কথা বলা যায় যে সিবিএসসি বোর্ডের এই পদক্ষেপ আগামী দিনে বিরাট উদাহরণ হতে চলেছে। কেননা বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে মুখস্ত ভিত্তিক সেখানে বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে গেলে শিক্ষার মান অনেকটাই বাড়বে। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সিবিএসসি বোর্ডের এই কঠোর সিদ্ধান্ত।তবে আগামীতে সমস্ত রাজ্য শিক্ষা বোর্ড গুলি এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে।
আরও পড়ুন
৩০ টাকায় পণ্য তৈরি, বিক্রি হবে ১০০ টাকায়, ১-১.৫ লক্ষ — সম্পূর্ণ গাইড -Slipper Making Business Idea
NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.