Summer Monsoon Business Idea: বর্তমানে ব্যবসা থেকে ঝুঁকি অনেকেরই। সেই ব্যবসা যদি হয় সময় অনুযায়ী যথাযজ্ঞ তাহলে তো আর কথাই নেই। কেননা যে কোন ব্যবসা শুরু করতে তার সঠিক সময় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ হয়।আজকে যে আপনাদের সামনে ব্যবসার কথা বলতে যাচ্ছি সেখানে একটি চাকরির সমতুল্য আই তো আছেই পাশাপাশি এটি হলো একটি সময় সাপেক্ষ অর্থাৎ বর্তমান সিজন অনুযায়ী এটি পারফেক্ট একটি আইডিয়া। আজকের প্রতিবেদনে আমরা এই ব্যবসা সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি
সম্পর্কিত পোস্ট
সুখবর! কাজের জন্য অন্য রাজ্যে নয়, বাংলায় কর্মসংস্থান, রাজ্যের কর্মশ্রী প্রকল্পের নয়া দিশা - Big News For Migrant Workersবর্তমানে যদিও অনেকের ব্যবসার দিকে কান বেশি কিন্তু সঠিক ব্যবসার আইডিয়া পাওয়া যায় না। অনেকেই চায় এমন একটা ব্যবসা করতে, যেখানে কম পুঁজি বিনিয়োগে ভালো লাভ পাওয়া যাবে। বর্তমান যেহেতু বর্ষাকাল তাই বর্ষার সময় এমন কিছু ব্যবসা আছে যা খুব তাড়াতাড়ি সফল করতে পারে আপনাকে। আজ আমরা এমনই একটি ব্যবসার কথা বলব, যা আপনি বর্ষার এই মরসুমে শুরু করে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকারও বেশি আয় করতে পারেন।
কি সেই ব্যবসা?
আজকে প্রতিবেদনে যে ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য দিতে যাচ্ছি তা হল ছাতার ব্যবসা। বর্ষাকালে ছাতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ, বিশেষ করে এ সময় বৃষ্টির প্রভাব অনেক বেশি এবং প্রচণ্ড রোদের সময় এটাই। শহর হোক বা গ্রাম – ছাতার চাহিদা সর্বত্র বিরাজমান। বর্ষা এলেই ছাতার বিক্রি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনি একটি লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ঠিক এই সময় যদি আপনি নিজে ছাতা তৈরি করতে পারেন, তাহলে আপনার উৎপাদন খরচ কমে যাবে এবং আপনার মুনাফার পরিমাণ অনেকটাই বাড়তে পারে। এছাড়াও ভারতীয় বাজারে এখনো ভালো মানের ইউনিক ডিজাইনের ছাতার চাহিদা ব্যাপক রয়েছে ।
এর জন্য কী কী যন্ত্রপাতি ও উপকরণ প্রয়োজন?
অনেকের জানা আছে, ছাতা হাতে বানানো যায় না, এর জন্য প্রয়োজন কিছু নির্দিষ্ট যন্ত্রপাতি ও মেশিন। নিচে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের তালিকা দেওয়া হল –
- ওয়েল্ডিং মেশিন
- রোলিং মেশিন
- আইলেট প্রেস মেশিন
- বাফিং মেশিন
- পাওয়ার প্রেস
- ওয়ার কাটিং মেশিন
- ব্লোয়ার
- গ্রাইন্ডার
- সেলাই মেশিন
- স্প্রিং তৈরি করার মেশিন
- টিউব সেটেলস ও টিউব পয়েন্টস
এছাড়াও আরও কিছু হ্যান্ড টুলস প্রয়োজন হবে যেমন:
- হাতুড়ি
- কাটিং টেবিল
- ছেনি
- পাঞ্চিং যন্ত্র
নোট : এই সমস্ত সরঞ্জামগুলো আপনি স্থানীয় বাজার থেকে কিনতে পারেন অথবা অনলাইনে বিভিন্ন ই-কমার্স যেমন ইন্ডিয়ামার্ট বা আলিবাবা থেকেও অর্ডার করতে পারেন। অনেক সময় দিল্লির বাজারে তুলনামূলকভাবে কম দামে এইসব মেশিন পাওয়া যায়।
এবার প্রশ্ন হল কত টাকা বিনিয়োগ লাগবে?
এই ব্যবসা আপনি ছোট, মাঝারি বা বড় পরিসরে শুরু করতে পারেন যা আপনার পুঁজির উপর নির্ভর করবে। শুরুতে যদি আপনি মাঝারি লেভেলে ব্যবসাটি শুরু করতে চান, তাহলে প্রাথমিকভাবে প্রোডাকশন মেশিন ও কাঁচামালের জন্য আনুমানিক ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হতে পারে তবে যদি আপনি কিছু কাঁচামাল সরাসরি বাজার থেকে কিনে থাকেন তাহলে অল্প পুজিতে শুরু করতে পারেন।
এই খরচে অন্তর্ভুক্ত থাকবে:
- যন্ত্রপাতি কেনা
- কাঁচামাল (ফ্যাব্রিক, হ্যান্ডেল, স্পোকস)
- মজুরি
- জায়গা ভাড়া (যদি নিজস্ব জায়গা না থাকে)
- বিদ্যুৎ খরচ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ
সব থেকে বড় কথা হলো যদি আপনার বাজেট আরও কম থাকে, তাহলে আপনি এক বা দুইটি মেশিন দিয়ে ছোট স্কেলে শুরু করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়াতে পারেন।
উৎপাদন প্রক্রিয়া কেমন?
ছাতা তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ সরল হয়, যদি আপনার কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অভিজ্ঞতা থাকে। মোটামুটি ছাতা তৈরির ধাপগুলো হল:
- ছাতার ক্যানভাস কাটা ও ডিজাইন করা
- ফ্রেম তৈরির জন্য ধাতব রড ও স্পোকস ব্যবহার
- ছাতা ক্যানভাস ফ্রেমে বসানো
- হ্যান্ডেল ফিটিং
- ফিনিশিং ও প্যাকেজিং
শুরুতেইআপনি চাইলে ৪ থেকে ৫ ধরনের ছাতা তৈরি করতে পারেন – যেমন রেনি ছাতা, সান ছাতা, ছোটদের জন্য কার্টুন ছাতা ইত্যাদি। এতে করে আপনি ভিন্ন ভিন্ন টার্গেট গ্রাহকদের ধরতে পারবেন এবং ভালো মুনাফা ও করতে পারবেন।
লাভ কতটা?
ছাতা তৈরির ব্যবসায় মুনাফার পরিমাণ নির্ভর করে আপনার উৎপাদন খরচ ও বিক্রির দামের উপর ভিত্তি করে। সাধারণত এই ব্যবসায় ২০% থেকে ৪০% পর্যন্ত প্রফিট মার্জিন থাকে। মানে আপনি যদি প্রতি মাসে ১.২০ লাখ টাকার মাল বিক্রি করেন, তাহলে ন্যূনতম ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহজেই লাভ হাতে পেতে পারেন।
যদি আপনি নিজেই ছাতা তৈরি করেন এবং পাইকারি দামে তা বিক্রি না করে রিটেইল (খুচরো) দামে বিক্রি করেন, তাহলে আপনার লাভ আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, আপনি প্রতি মাসে ৪০০টি ছাতা তৈরি করলেন এবং প্রতি ছাতা ৩০০ টাকা দামে বিক্রি করলেন, তাহলে মোট বিক্রি হবে ১.২০ লাখ টাকার। এতে যদি ৫০ হাজার টাকার কাঁচামাল ও অন্যান্য খরচ হয় ২০, তাহলে অবশিষ্ট ৫০ হাজার টাকা লাভ সম্ভব।
কোথায় বিক্রি করবেন?
ছাতা তৈরি করে বিক্রির জন্য আপনি নীচের প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে পারেন:
- স্থানীয় বাজার বা দোকানে সরবরাহ করতে পারেন
- নিজস্ব রিটেইল শপ খুলে বিক্রি
- মেলা, হাট ও স্কুলের সামনে বিক্রি
- অনলাইন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম (Amazon, Flipkart)
- সোশ্যাল মিডিয়া (Facebook Marketplace, Instagram Shop)
- হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস ব্যবহার করে প্রমোশন
নোট : সঠিক মার্কেটিং ও ইউনিক ডিজাইন থাকলে আপনি আপনার ছাতাগুলিকে ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন।
এই ব্যবসার সুবিধা কী কী?
- সিজনাল ডিমান্ড হলেও প্রচুর বিক্রি হয়ে থাকে
- নিজেই উৎপাদন করে মুনাফা বাড়ানো যায়
- লোকাল মার্কেট ছাড়াও অনলাইনেও বিক্রি সম্ভব হবে
- অল্প সময়ে ROI (Return on Investment) পাওয়া যায়
- গ্রামে বা মফস্বল এলাকায় শুরু করা সম্ভব
ছাতা ধরে ব্যবসা শুধু ভরসা সময় নয় অন্যান্য সময়ও সারা বছর ধরে চলতে পারে। যেমন দেশের এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে সারা বছর ধরে বৃষ্টি হয় অথবা প্রায় বৃষ্টির লক্ষণ থেকে থাকে এর পাশাপাশি দেশে এমন কিছু জায়গায় আছে যেখানে সারা বছর ধরে প্রখর রোদ থাকে। এই দুই জায়গায় আপনি ভালোভাবে এই ব্যবসা শুরু করতে পারলে আপনার ব্যবসার ভবিষ্যৎ অনেক উঁচুতে উঠবে। ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই এই সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত জেনে নিবেন।
আরও পড়ুন
বাড়ি বসে কাজ, মাসিক ইনকাম ২০-৫০ হাজার টাকা, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই সুযোগ - Work From Home Business Idea
NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.