শুরু হচ্ছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি! বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারিখ, স্থান ও সময় বেধেছিল রাজ্য সরকার – WB APAS Program 2025

WB APAS Program:  পশ্চিমবঙ্গ সরকার সাধারণত পশ্চিমবঙ্গবাসের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ধরনের প্রকল্প নিয়ে আসে। এই বিভিন্ন প্রকল্পগুলি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে নানা কর্মসূচি ও গ্রহণ করে থাকেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যতম কর্মসূচি হলো দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। কিন্তু বারে বারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক এই দুয়ারে সরকার এর কর্মসূচির নিয়ম-কানুনে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। এবছর ফের পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক আমাদের পাড়ায় সমাধান নামে এক কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে যার মাধ্যমে বুথে গিয়ে সরকারি কর্মীরা গ্রামে নানা সমস্যার সমাধান করবেন।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার চলতি বছরে যে কর্মসূচি সূচনা করেছেন তার নাম ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হল রাজ্যের প্রতিটি মানুষের নিত্যদিনের ছোটখাটো সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক সমাধানের পথ তৈরি করে দেওয়া তা আবার সরকারি মাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই উদ্যোগের ঘোষণা করেন, এবং জানান এটি জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একটি কার্যকরী মাধ্যম হিসেবে গণ্য হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

প্যান কার্ড থাকলেই 5 লাখ তাৎক্ষণিক লোন! ঘরে বসে নিয়ে ফেলুন সুযোগ - Pan Card Instant Loan Idea

কর্মসূচির সময়কাল ও পরিচালনার ধারা

এই কর্মসূচি আগামী ২রা আগস্ট ২০২৫ থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হবে এবং চলবে ৩রা নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। তবে পূজার সময় ১৫ দিনের একটি বিরতি রাখা হয়েছে যাতে উৎসবের ব্যস্ততা কোনওভাবে ক্যাম্পের কাজে প্রভাব না খেলতে না পারে। ক্যাম্পের সময় নির্ধারিত হয়েছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২:৩০ পর্যন্ত। এই ক্যাম্পগুলি আয়োজিত হবে বুথভিত্তিক বা অঞ্চলভিত্তিকভাবে, যা নির্ভর করবে শহর ও গ্রামাঞ্চলের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী।

বাজেট ও আর্থিক বরাদ্দ

ইতিমধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকার ৮০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। রাজ্যের প্রতিটি পোলিং বুথের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ব্যয় বরাদ্দ করা হবে। এই বরাদ্দকৃত অর্থ সরাসরি স্থানীয় সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হবে বলে জানা যায়, যেমন রাস্তাঘাটের মেরামতি, জল নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানীয় জলের সমস্যা, স্ট্রিট লাইট বসানো ইত্যাদি নানা।

ক্যাম্পের আয়োজন ও কাঠামো

এই ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পগুলি আয়োজিত হবে পূর্বের ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পগুলির মতোই পরিচিত স্থানগুলোতে। প্রতি তিনটি পোলিং বুথ মিলে একটি করে ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে, তবে গ্রামীণ ও দুর্গম এলাকাগুলিতে প্রতিটি বুথের জন্য একটি ক্যাম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শহরাঞ্চলে প্রয়োজনে তিনটির বেশি বুথ মিলেও একটি ক্যাম্প হতে পারে বলে জানা যায়। প্রতিটি ক্যাম্পে স্থানীয় সমস্যাগুলির রিপোর্ট সংগ্রহ, সমাধানের প্রস্তাব ও জরুরি নির্দেশ প্রদান করা হবে।

নিরপেক্ষ প্রতিনিধির নিয়োগ

জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিটি বুথ থেকে একজন নিরপেক্ষ সাধারণ প্রতিনিধি নেয়া হবে। এই প্রতিনিধি হতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, সরকারী কর্মচারী, সমাজসেবী অথবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোনো সদস্য। তাদের নির্বাচনে স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থা অবশ্যই থাকবে এবং তাদের রাজনৈতিক কোনও পরিচয় থাকবে না।

সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও প্রতিবেদন প্রণয়ন

প্রতিনিধিরা জনগণের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে স্থানীয় সমস্যা সংগ্রহ করে থাকনেন। এরপর সেই সমস্যাগুলি একটি নির্ধারিত ফর্মে তালিকাভুক্ত করে স্বাক্ষরিত রিপোর্ট আকারে তৈরি করা হবে। সরকারের তরফ থেকে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী থাকবেন যিনি সেই রিপোর্ট যাচাই করবেন এবং একইসঙ্গে স্বাক্ষর করবেন তিনিও। এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিবেদনগুলি সঠিকভাবে নথিভুক্ত হবে এবং কোনও পক্ষপাতিত্ব বা রাজনৈতিক প্রভাব এতে থাকবে না।

তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও ক্যাম্প সংক্রান্ত তথ্য

এই প্রকল্পকে আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে রাজ্য সরকার একটি বিশেষ ওয়েবসাইটও চালু করতে চলেছে। এই ওয়েবসাইটে প্রতিটি ক্যাম্পের নির্দিষ্ট তারিখ, সময় এবং স্থান ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই তার বুথ বা অঞ্চলের ক্যাম্প সম্পর্কে অবগত হতে পারেন। ক্যাম্প সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য অনলাইনে জানার সুযোগ থাকবে, যা ডিজিটাল ইন্টারফেসকে সহজ করবে।

নির্ধারিত কর্মপদ্ধতি ও নিরীক্ষণ ব্যবস্থা

এরপর প্রতিটি রিপোর্ট সরকারী স্তরে যাচাই করার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহে পাঠানো হবে, যেমন পঞ্চায়েত, পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ ইত্যাদি। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে তা পুনরায় আলোচনার জন্য তুলনাও করা হবে। রাজ্য প্রশাসন পর্যবেক্ষণে বিশেষ মনোযোগ দেবেন এবং প্রতিটি ক্যাম্প ও তার রিপোর্ট ডিজিটালি মনিটরিংও করা হবে।

জনস্বার্থে প্রত্যাশিত ফলাফল

এই কর্মসূচি যদি রাজ্যে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ছোটখাটো অনেক সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে। স্থানীয় স্তরে সরকারের সরাসরি উপস্থিতি ও সাধারণ মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া এই প্রকল্পকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এতে করে একদিকে যেমন প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে, তেমনি সমস্যার দ্রুত সমাধানও নিশ্চিত করা হবে।

সামাজিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। এটি শুধুমাত্র একটি সরকারি কর্মসূচি নয়, বরং এটি একটি সামাজিক আন্দোলনও বটে, যা স্থানীয় মানুষকে নিজেদের সমস্যার প্রতি সচেতন ও সক্রিয় করে তুলতে চলছে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পকে আরও বিস্তৃত করে রাজ্যের সমস্ত স্তরে একটি স্থায়ী সমাধানমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।

‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধাধ’ একটি যুগান্তকারী কর্মসূচি হতে চলেছে যদিও এর আগে দুয়ারে সরকারও কম খ্যাতি পাইনি। তবে রাজ্য সরকারের প্রতিটি কর্মসূচি এক একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। এবারের কর্মসূচি একদম সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করবে এবং কোন রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে না এর জন্য আরও বেশি প্রভাবশালী হতে চলেছে। আপনার যদি কোনরকম অসুবিধা বা সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার এলাকায় এই কর্মসূচি হওয়ার সময় নিজের সমস্যা তুলে ধরতে পারেন।

আরও পড়ুন

দৈনিক আয় ২,০০০+! সবসময় ট্রেন্ডিং এই ব্যবসা - Daily Income Business Idea

Leave a Comment