WB DA Arrear Update: রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ডিএ মামলা টানাটানি চলছে। একদিকে রাজ্য সরকার অন্যদিকে রাজ্য সরকার কর্মচারী। ডিএ মামলার দৌড় শুরু হয় আন্দোলন থেকে শুধু ধাপে ধাপে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে পৌঁছায়। যদিও সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছুদিন এই মামলার কয়েকবার শোনানি হয় কিন্তু শেষ বারের সুপ্রিম কোর্টের রায় রাজ্য সরকারের উপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করে। কেননা এখানে ২৫% বকেয়া ডিএ মেটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। যদিও তার সময়সীমা বেঁধে দেয় কিন্তু রাজ্য আর্থিক সংকট দেখিয়ে আপাতত কোনো পদক্ষেপ নেই রাজ্যের।
এদিকে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ বয়ে এনেছে একরাশ আশাবাদ সংবাদ। মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance বা DA) নিয়ে দীর্ঘদিনের জট এবার হয়তো কিছুটা হলেও সমস্যা মিটতে চলেছে, এমনই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দিক থেকে। বিশেষ করে,বকেয়া ডিএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলমান মামলার পরবর্তী শুনানি যেহেতু নির্ধারিত হয়েছে ৪ আগস্ট ২০২৫, তার আগে পরিস্থিতি ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন চাপ এবং প্রত্যাশার মিশ্র পরিবেশও বটে।
সম্পর্কিত পোস্ট
সুখবর! কাজের জন্য অন্য রাজ্যে নয়, বাংলায় কর্মসংস্থান, রাজ্যের কর্মশ্রী প্রকল্পের নয়া দিশা - Big News For Migrant Workersআমরা সকলে জানি, গত ১৬ মে, ২০২৫ তারিখে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে একটি অন্তর্বর্তী আদেশে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য বকেয়া মহার্ঘ ভাতার অন্তত ২৫ শতাংশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিশোধ করুন। এমনকি ২৭ জুনের মধ্যে সেই অর্থ প্রদানের নির্দেশও দেওয়া হয় শীর্ষ আদালত কর্তৃক। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ এই পর্যন্ত কার্যকর করেনি, যা নিয়ে আদালত অবমাননার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে বলে দাবি একাংশ সরকারি কর্মীর।এদিকে এই প্রেক্ষাপটে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিন মলয়বাবু তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, রাজ্য সরকার আদালতে নিজেদের সুবিধার জন্য যেসব যুক্তি তুলে ধরছে, তা খুব একটা কার্যকর না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাঁর মতে, রাজ্য সরকার যদি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে যথাসময়ে ডিএ-র অর্থ প্রদান না করে, তাহলে আদালত এই বিষয়ে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং হয়তো আরও বৃহৎ অঙ্কের ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিতে পারে এমনটাই আশঙ্কা। এমনকি তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, পুজোর আগেই এই অর্থ কর্মীদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ, অক্টোবর-নভেম্বরে উৎসবের মরসুমের ঠিক আগে যদি এই অর্থ মেলে, তবে তা শুধু কর্মীদের জন্যই নয়, রাজ্যের সামগ্রিক অর্থনৈতিক গতিবিধির জন্যও ইতিবাচক হতে চলেছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশের দীর্ঘদিনের দাবি, অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আমাদের রাজ্যে ডিএ বকেয়া রয়ে গেছে বহু মাসের। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার সহ অধিকাংশ রাজ্য নিয়মিত ডিএ আপডেট দিয়ে থাকেন এবং কর্মীদের ব্যয়সাপেক্ষ জীবনের ভারসাম্য রক্ষায় সহযোগিতাও করে থাকেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বারবার তহবিল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ডিএ প্রদানে বিলম্ব করেছে। একই সময়ে খেলা, মেলা ও অন্যান্য উৎসবে রাজ্যের ব্যয় নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠছে। মলয় মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে কড়া ভাষায় বলেছেন, যখন রাজ্য বিভিন্ন উৎসবে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে দ্বিধা পিছুপা হাটে না, তখন কর্মীদের প্রাপ্য অধিকার নিয়ে কেন টালবাহানা করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে Coordination Committee ইতিমধ্যে ডিএ প্রদান না করার ফলে Pen Down প্রোগ্রাম ঘোষণা করেছে। সরকারি কর্মীরা ক্রমাগত ক্ষোভে ফুঁসছেন এবং শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য হওয়ার বিষয়টি তারা স্পষ্ট করে তুলে ধরতে চাইছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় সর্বশক্তি দিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার কথাও জানায়। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এই মামলার রায় শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
এদিকে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছে, যাতে আদালতের আগের রায় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছে। সেই আবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের হাতে বর্তমানে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় চলতি অর্থবর্ষে বকেয়া ডিএ মেটানোর মতো বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি। এই কারণ দেখিয়ে তারা অন্তত ছয় মাসের অতিরিক্ত সময় চেয়ে আদালতে দারস্থ হয়েছে। অর্থাৎ রাজ্য সরকার কার্যত বলছেন, যত সহজে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বাস্তবে তা বাস্তবায়িত করা সহজ নয়। তবে এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে এখনো সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। কারণ একদিকে রাজ্যের বার্ষিক বাজেটে বিভিন্ন খাতে ব্যয়বৃদ্ধির খবর শোনা যাচ্ছে, অন্যদিকে কর্মীদের ন্যায্য পাওনা দিতে গড়িমসি, এটা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
সরকারি কর্মীদের মধ্যে এখন একধরনের ধৈর্য্যচ্যুতি লক্ষ্য দেখা যাচ্ছে। তারা চাইছেন, অবিলম্বে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মান্য করে অন্তত ২৫ শতাংশ অর্থ প্রদান করুক, তারপর পরবর্তী ধাপে বাকি অর্থ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই মুহূর্তে আদালতের প্রতি কর্মীদের ভরসা ও প্রত্যাশা দুটোই তুঙ্গে উঠেছে। ফলে ৪ অগস্টের শুনানির দিকে তাকিয়ে আছে সরকারি কর্মীরা।
পরিশেষে বলা যায়, ডিএ সংক্রান্ত এই মামলার ভবিষ্যৎ রায় রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক দায়িত্ব, আদালতের নির্দেশ মান্য করার বাধ্যবাধকতা এবং কর্মীদের ন্যায্য অধিকারের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করতে কতটা সক্ষম হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে গোটা রাজ্যে সরকারি কর্মীরা এখন একটাই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন—এবার কি সত্যিই পুজোর আগেই মিলবে বহু প্রতীক্ষিত বকেয়া মহার্ঘ ভাতা? নাকি ফের নতুন মোড়?
আরও পড়ুন
বাড়ি বসে কাজ, মাসিক ইনকাম ২০-৫০ হাজার টাকা, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই সুযোগ - Work From Home Business Idea
NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.