রাজ্য সরকারের নতুন কর্মীসূচি, বুধ পিছু ১০ লক্ষ টাকা খরচ – WB Govt New Scheme Launched

WB Govt New Scheme Launched:  রাজ্য সরকার সাধারণত রাজ্যবাসীর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে আসেন, এবার ফের একুশে জুলাইয়ের পরের দিনে নয়া কর্মসূচীর ঘোষণা করেছে। রাজ্য সরকারের এই ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্য সরকারের বহু জনগণ উপকৃত হতে চলেছে। এই সরকারের এমন পদক্ষেপ রাজ্যবাসীর জন্য কতটা উপকার হতে চলেছে তা আগামী দিনে স্পষ্ট হবে। আসুন এই প্রতিবেদনে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

রাজ্যের মানুষের দোরগোড়ায় এবার আসছে নতুন এক সরকারি উদ্যোগ, এর লক্ষ্য শুধু উন্নয়ন নয়, জনগণের বাস্তব সমস্যার সরাসরি সমাধান করা হবে।এর নাম—আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান। রাজ্যের প্রতিটি পাড়ায় গড়ে উঠবে একটি করে স্থায়ী সরকারি কেন্দ্র, যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান হবে সরাসরি সেখানে গিয়ে। রাজনীতির উত্তাপের মধ্যেই এই প্রকল্প ঘোষণার মাধ্যমে রাজ্য সরকার এক অভিনব দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো—পাড়ার ছোট ছোট সমস্যাগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের দ্রুত সমাধানের পথ খোঁজা এবং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানও তৈরি করা। প্রতিটি বুথে একটি করে সরকারি সহায়তা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে, যেখানে থাকবেন সরকারি অফিসার, থাকবেন সমস্যার সরাসরি সমাধানের ব্যবস্থা।

মাত্র ৭৫ টাকায় ৩০ দিন আনলিমিটেট ফ্রী, এখনই বিস্তারিত জেনেনিন – BSNL Unlimited Offer 2025

আর এর জন্য প্রতিটি বুথে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা করে। গোটা রাজ্যে এমন বুথের সংখ্যা প্রায় ৮০,০০০ এর মতো। সেই হিসেবে প্রকল্পটির জন্য সরকার খরচ করছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। বিশাল এই বাজেট থেকে স্পষ্ট, এই প্রকল্পকে ঘিরে সরকারের প্রত্যাশা কতটা গভীর হতে পারে।

কী ধরণের সমস্যার সমাধান হবে এই প্রকল্পে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়, “একটা পাড়ায় হয়ত একটা পানীয় জলের কল দরকার, কোথাও হয়ত বিদ্যুতের খুঁটি লাগাতে হবে, আবার কোথাও স্কুলের ছাদ দিয়ে জল পড়ছে—এই ধরনের ছোট ছোট সমস্যার দ্রুত সমাধানই আমাদের লক্ষ্য।” অর্থাৎ, এটি দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প নয়, বরং স্থানীয়, জরুরি এবং জনজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে এমন সমস্যাগুলির প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হবে।

এই ক্যাম্পে উপস্থিত থাকবেন সরকারি আধিকারিকরা, যারা সারা দিন ধরে সাধারণ মানুষের অভিযোগ শুনবেন, প্রয়োজনীয় সমাধানের রূপরেখা তৈরি করবেন এবং তা সরাসরি অনলাইন পোর্টালে আপলোড করে বাস্তবায়নের দিকে এগোবেন। একেকটি সেন্টারে তিনটি বুথ মিলিয়ে গঠন করা হবপ একটি ইউনিট, যেখানে একদিন করে ক্যাম্প হবে এবং দুই মাসে গোটা রাজ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে জানা গিয়েছে।

এই প্রকল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এটি “দুয়ারে সরকার” প্রকল্পের মতোই মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেবে, তবে আরও গভীরে, আরও পাড়াভিত্তিক ভাবে হতে চলেছে। আগে যেখানে ব্লক বা পঞ্চায়েত স্তরে গিয়ে আবেদন করতে হতো, এখন সেই প্রক্রিয়া এসে পৌঁছবে এলাকাভিত্তিক বুথে। ফলে সময়, খরচ, এবং ভোগান্তি—সবই অনেকটাই কমবে সাধারণ মানুষের জন্য।

এই ক্যাম্পে যে পরিষেবাগুলি পাওয়া যাবে তার মধ্যে রয়েছে—

  1. এলাকার রাস্তা মেরামতের প্রস্তাব
  2. বিদ্যুৎ সংযোগ বা লাইট বসানোর কাজ
  3. জলাশয়, পুকুর বা ড্রেন পরিষ্কার
  4. স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন
  5. পানীয় জল সরবরাহের সমস্যা
  6. জমি মিউটেশন, রেশন কার্ড, লক্ষ্মীর ভান্ডারসহ অন্যান্য প্রকল্পে আবেদন

এই উদ্যোগ একদিকে যেমন ছোট কাজগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হবে, অন্যদিকে রাজ্যের বেকার যুব সমাজের জন্যও কর্মসংস্থানের দরজা খুলে দেবে। কারণ প্রতিটি বুথে কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হবে লোকবল, তথ্য এন্ট্রি অপারেটর, সহায়ক কর্মী, তদারকি আধিকারিক, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর—যার মানে প্রচুর নতুন চাকরির সম্ভাবনাও রয়েছে।

রাজ্যজুড়ে এই প্রকল্প শুরু হচ্ছে ২ আগস্ট থেকে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসে আবার “দুয়ারে সরকার” প্রকল্প চালু হবে নতুনভাবে, যাতে গ্রাম ও শহরের মধ্যে সরকারি পরিষেবার ফারাক ধীরে ধীরে মিটে আসে।

কৃষি দপ্তরে স্কলারশিপ! ১০ম পাশে সর্বাধিক ৪০,০০০ অনুদান – Agriculture Department Scholarship 2025

তবে প্রকল্পটি ঠিক কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে  এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের উপর। নির্বাচনের আগে শুরু হওয়া এই প্রকল্প যদি প্রকৃত অর্থে মানুষের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পারে, তবে তা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যেমন রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক বার্তা আনবে, তেমনি সাধারণ মানুষের জীবনেও আনবে প্রত্যাশিত স্বস্তি।

শেষ পর্যন্ত এটা বলা যায়, এই প্রকল্প শুধু একটি রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের শাসনব্যবস্থার একটি বাস্তব পরিবর্তনের চেষ্টা হতে চলেছে। যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যকর হয়, তাহলে “আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান” হতে পারে রাজ্যের ইতিহাসে একটি মাইলফলক উদ্যোগ।

Leave a Comment