মমতা দিচ্ছে কন্যা বিবাহের জন্য 25,000 টাকা! শুধু এই কাজ করলে কেল্লাফতে – WB Govt Scheme

WB Govt Scheme: পশ্চিমবঙ্গের লাখ লাখ পরিবারে একটি চাপ নিঃশব্দে কাজ করে থাকে তা হল—মেয়ের বিয়ের খরচ। দরিদ্র কিংবা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে একটি মেয়ের বিয়ে মানেই বহু মাসের সঞ্চয় শেষ হয়ে যাওয়া, অনেক সময় ধারদেনা করে বিয়ের আয়োজন করা হয়ে থাকে। অথচ সরকার যদি পাশে দাঁড়ায়, পরিস্থিতি কত সহজ হতে পারে—এই ভাবনাতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার শুরু করেছে দারুণ এক প্রকল্প

এই প্রকল্প ঠিক কী? কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ?

এই প্রকল্প হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের একটি সমাজকল্যাণমূলক উদ্যোগের মধ্যে একটি, যার লক্ষ্য হল বিয়ের সময়ে মেয়েদের পরিবারকে এককালীন মোটা আর্থিক সাহায্য প্রদান করা। সরাসরি মেয়েটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৫,০০০ টাকা পাঠানো হয়ে থাকে, যাতে তারা সম্মানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

Money Making Tips :মাত্র ১০০ টাকার জিনিস ৭০০ টাকায় বিক্রি, দারুণ ব্যবসার আইডিয়া

তাই এই প্রকল্প শুধুমাত্র টাকা দেওয়ার প্রকল্প নয়—এটি এক সামাজিক বার্তাও দেয় য, “মেয়ের বিয়ে একটা বোঝা নয়, রাষ্ট্র তার পাশে আছে।”

কী রয়েছে এই প্রকল্পের যোগ্যতার শর্তে?

যদিও এই প্রকল্পটি সর্বজনীন নয়, কিন্তু বেশিরভাগ দরিদ্র পরিবারই এই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য হয়ে থাকে। দেখে নিন শর্তগুলি:

  1. প্রার্থীর বয়স: ১৮ বছর বা তার বেশি
  2. পাত্রের বয়স: কমপক্ষে ২১ বছর
  3. অবিবাহিত: মেয়েটি প্রথমবার বিয়ে করছে
  4. আয় সীমা: পরিবারের বার্ষিক আয় ১.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে
  5. বাসিন্দা: বিগত ৫ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে বসবাসরত এবং স্থায়ী বাসিন্দা
  6. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট: মেয়েটির নিজের নামে একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক

আবেদনের জন্য কোন কোন কাগজপত্র লাগবে?

এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কিছু দরকারি নথিপত্র লেগে থাকে, যেমন—

  1. জন্ম সার্টিফিকেট / আধার / ভোটার কার্ড – বয়স প্রমাণের জন্য
  2. অবিবাহিত থাকার ঘোষণা পত্র
  3. পাত্রের বয়সের প্রমাণপত্রের ডকুমেন্টস 
  4. বিয়ের তারিখ ও অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ (উদাহরণ: নিমন্ত্রণ পত্র)
  5. বার্ষিক আয়ের স্বঘোষণা / আয় সার্টিফিকেট
  6. বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণ
  7. ব্যাংক পাসবুকের কপি
  8. পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (পাত্র ও পাত্রী উভয়ের)

ফর্ম সংগ্রহ করবেন কোথা থেকে?

আপনার এলাকার উপর নির্ভর করে ফর্ম সংগ্রহের জায়গা আলাদা হতে পারে:

  • গ্রামীণ এলাকা: ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিস (BDO অফিস) থেকে সংগ্রহ করা দরকার
  • মিউনিসিপ্যাল অঞ্চল: সাব-ডিভিশনাল অফিস (SDO অফিস) থেকে
  • কর্পোরেশন এলাকা: কমিশনার, বরো বা ওয়ার্ড অফিস থেকে

তবে এখন সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে অনলাইনে গিয়ে ফর্ম ডাউনলোড করা –
👉 http://www.wbcdwdsw.gov.in

আবেদনের সময়সীমা সম্পর্কে জরুরি তথ্য

তবে এক্ষেত্রে আবেদন জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। বিয়ের সম্ভাব্য তারিখের ৩০ থেকে ৬০ দিন আগে আবেদনপত্র সহ সমস্ত নথি সহ জমা দিতে হবে। দেরি করলে ফর্ম গ্রহণ নাও হতে পারে।

তাই বিয়ের পরিকল্পনা শুরু করার সঙ্গেই এই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সঠিক সময় বেছে নিতে হবে এবং আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

বিনামূল্যে টাকা মানেই নয় কেবল সাহায্য, বরং সম্মানের প্রাপ্তি

তবে মেয়ের বিয়েতে সহায়তা মানে যেন করুণা নয়, বরং সম্মানের সঙ্গে জীবনের একটি নতুন পর্ব শুরু করার সাহসও বটে। রূপশ্রী প্রকল্প এই ভাবনাকে প্রতিষ্ঠা করে থাকে।

সরকার এই টাকা সরাসরি মেয়েটির নিজের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে এক অর্থে মেয়ের হাতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি তুলে দিয়ে দেয়। অনেক সময় দেখা যায়, এই টাকাই একটি পরিবারের ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।

এই প্রকল্পে ইতিমধ্যে উপকৃত হয়েছেন হাজার হাজার পরিবার

এদিকে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের লাখ লাখ কন্যা এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ ও আদিবাসী অঞ্চলে এই প্রকল্প নারী শিক্ষার পরেও দ্বিতীয় বিপ্লব বলে মনে করা হচ্ছে ।

তাই এই সহায়তা অনেক সময় একজন কন্যার জীবন বদলে দেওয়ার চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়ায়। একটা ছোট সহায়তা, বড় ভবিষ্যতের দিশা দেখাতে পারে সহজেই।

এই প্রকল্প আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাক, সেই আমাদের চাওয়া

তাই যত বেশি পরিবার এই প্রকল্পের ব্যাপারে জানবেন, তত বেশি মেয়ের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব এই তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া, যাতে একজন মা-বাবা এই চিন্তায় না ভোগেন যে মেয়ের বিয়ে কীভাবে দেবেন বা আর্থিক সাহায্য থেকে বঞ্চিত না হয়।

একজন কন্যার ভবিষ্যতের সঙ্গে একটি পরিবার, একটি সমাজ, এমনকি একটি প্রজন্ম জড়িয়ে থেকে থাকে। আর সেই ভবিষ্যতকে একটু সাবলীল করতেই এই প্রকল্প আনা হ’য়েছে।

এটি শুধুই টাকা নয়, এটি আত্মসম্মান

তাই এটা বলাই যায়, রূপশ্রী প্রকল্পে যে ২৫,০০০ টাকা মেলে, সেটি একরকম অর্থনৈতিক সাহস রূপে গন্য হবে। এটি একটা পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, একজন কন্যার হাত ধরে সমাজে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেওয়া হিসে কাজ করে।

সুতরাং, যদি আপনার পরিচিত বা পরিবারে কেউ এই প্রকল্পের আওতায় আসতে চান, তাহলে তাঁকে অনুরোধ করুন যেন আবেদন করতে দেরি না করে দেয়।


📌 এই প্রতিবেদনটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রূপশ্রী প্রকল্প সম্পর্কিত সাধারণ তথ্য, যা কন্যাসন্তানদের আর্থিক ও সামাজিক স্বনির্ভরতা অর্জনে সহায়ক হয়ে থাকে।
সরকারি ওয়েবসাইট: www.wbcdwdsw.gov.in
প্রকল্পের নাম: রূপশ্রী প্রকল্পঅন্তর থেকে গড়া একটি গর্বের উদ্যোগ। বিস্তারিত জানতে বা সুবিধা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর অবশ্যই ভিজিট করুন

আরও পড়ুন

আপনার এলাকায় নতুন ব্যবসা! দৈনিক আয় ₹৫,০০০ টাকা, এখনই শুরু করুন - Tiny House Business Idea

Leave a Comment

error: Content is protected !!