ফের ১৪৪ সম্প্রদায়ের OBC বাতিল , আপাতত ২০০৯ সাল পর্যন্ত OBC সার্টিফিকেট বহাল, চাঞ্চল্যকর তথ্য – WB OBC Case Update Today

WB OBC Case Update Today:  দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে কেসে ঝুলে রয়েছে ওবিসি মামলা। এর জেরে নানা দিক থেকে বহু রেজাল্ট, নিয়োগ, ভর্তি ও অন্যান্য বিষয়ে কাজ বন্ধ করেছে নানা দপ্তর। যদিও কিছুদিন আগে রাজ্য সরকারের নতুন তালিকা ঘিরে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করে কিন্তু অন্যদিকে সরকার সুপ্রিম কোর্টে দারস্থ হলে সেই স্থগিতাদেশের উপর ফের সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করে। সুপ্রিম কোর্ট জানায় রাজ্য সরকারের এমন ক্ষমতা থাকে যে সে নতুন তালিকা বা জাতি যুক্ত করতে পারে যদি বৈধ হয়। এদিকে এমন অবস্থায় ফের নয়া চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে

পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি (Other Backward Classes) সংরক্ষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চললেও এখনো সমাধান হয়নি। এই বিষয়ে বহু মামলা কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে যা রাজ্যের সংরক্ষণ নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে বলে জানা যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

Money Making Tips :মাত্র ১০০ টাকার জিনিস ৭০০ টাকায় বিক্রি, দারুণ ব্যবসার আইডিয়া

হাইকোর্টের মূল সিদ্ধান্ত

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বর্তমানে কেবল ২০০৯ সালের ওবিসি তালিকা রাজ্যে কার্যকর হবে। পরবর্তীতে (২০১০–২০১২ সালে) যে অতিরিক্ত সম্প্রদায় যুক্ত করা হয়েছিল, সেগুলো আপাতত সংরক্ষণের আওতায় আসবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। এর ফলে প্রায় ১৪৪টি সম্প্রদায় এই মুহূর্তে সংরক্ষণের সুবিধা থেকে বাদ যাবে বলে জানা যায়।

২০০৯ সালের ওবিসি তালিকার পটভূমি

  • প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি সংরক্ষণ চালু হয় ১৯৯৩ সাল থেকে ।
  • ২০০৯ সালে সরকার একটি সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করে যেখানে ৬৬টি সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।
  • সেই সময় সংরক্ষণের হার নির্ধারিত হয় ৭ শতাংশ
  • এই তালিকাই এখন আবার কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য আদালত।

২০১০–২০১২ সালের পরিবর্তন ও বিতর্ক

২০১০–২০১২ সালের মধ্যে রাজ্য সরকার এই তালিকায় অনেক সম্প্রদায় যুক্ত করে।

  • এখানে ওবিসি ক্যাটাগরিকে ভাগ করা হয় OBC-A এবং OBC-B-তে।
  • মোট সম্প্রদায় সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৪-টি সংরক্ষণ বেড়ে হয় ১৭% পর্যন্ত।
  •  এদিকে এই নিয়ে বিরোধী দল এবং কিছু সামাজিক সংগঠন অভিযোগ তোলে যে, এই সম্প্রসারণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এবং যথাযথ সমীক্ষা ছাড়াই তালিকা তৈরি হয়েছে।

নতুন রায়ের মূল প্রভাব

হাইকোর্টের রায় তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষা, চাকরি এবং ভর্তি প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলবে।

  1. WBJEE ভর্তি প্রক্রিয়া
    • জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল প্রকাশ স্থগিত করা হয়
    • নতুন ফল প্রকাশে শুধুমাত্র ২০০৯ সালের তালিকার সম্প্রদায় সংরক্ষণের সুবিধা পাবে বলে জানানো হয়।
  2. স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) পরীক্ষা
    • আসন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন সম্প্রদায় বাদ যেতে পারে।
  3. কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি
    • কোটার সিট পুনর্বিন্যাস করা হবে।

টেবিল: ২০০৯ বনাম ২০১০–২০১২ সালের তালিকার তুলনা

বছরমোট সম্প্রদায় সংখ্যাবিভাগসংরক্ষণের শতাংশবর্তমান অবস্থা
২০০৯৬৬একক বিভাগ৭%বহাল
২০১০–২০১২১৪০+ (OBC-A + OBC-B)দুটি বিভাগ১৭% পর্যন্তস্থগিত

আদালতের যুক্তি

এদিন আদালত জানিয়েছে— ২০১০ সালের পর থেকে যে নতুন সম্প্রদায় যুক্ত হয়েছে, তাদের অন্তর্ভুক্তির পদ্ধতি সঠিক ছিল না। যথাযথ ডেটা সংগ্রহ ও যাচাই প্রক্রিয়া ছাড়া রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এই সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে আসে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

  • শাসক দল জানিয়েছে তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবে এবং নতুন সম্প্রদায়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য  আাবর আপিল জানাবে।
  • বিরোধী দল বলছে এই রায় প্রমাণ করেছে যে সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে সংরক্ষণ নীতি পাল্টে দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলার ভবিষ্যৎ

এখন মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।

  • এই মামলার সোমবার শুনানি হওয়ার কথা।
  • যদি হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে ২০০৯ সালের তালিকাই কার্যকর থাকতে পারে।
  • যদি স্থগিত হয়, তবে বর্তমান বিস্তৃত সংরক্ষণ নীতি ফিরে আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব

  • ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে: নতুন তালিকায় থাকা অনেকেই সংরক্ষণ সুবিধা হারাবেন, ফলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সুযোগ অনেক কমে যাবে।
  • চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে: আসন্ন নিয়োগে নতুন তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা সংরক্ষণ পাবেন না বলে স্পষ্ট।
  • পুরনো তালিকায় থাকা সম্প্রদায়: তাদের সুযোগ বাড়বে কারণ প্রতিযোগিতা আরও কমবে।

FAQ

Q1: এখন কি সব ওবিসি প্রার্থী সংরক্ষণ পাবেন?
না, শুধু ২০০৯ সালের তালিকায় থাকা ৬৬টি সম্প্রদায়ের সদস্যরা এই সংরক্ষণ সুবিধা পাবেন।

Q2: আগে যারা নতুন তালিকায় চাকরি বা ভর্তি পেয়েছেন, তাদের কী হবে?
সম্ভাবনা আছে ইতিমধ্যেই প্রাপ্ত সুযোগ বাতিল করা হবে না।

Q3: রায় কি স্থায়ী?
না, সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের ওপর নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ।

তাই সবশেষে বলা যায়, কলকাতা হাইকোর্টের এই নতুন রায় পশ্চিমবঙ্গের সংরক্ষণ নীতিতে বড়সড় পরিবর্তন করেছে। এটি যেমন পুরনো তালিকাভুক্ত সম্প্রদায়গুলির জন্য ইতিবাচক খবর , তেমনি নতুন তালিকায় থাকা অনেকের জন্য ধাক্কা হতে চলেছে। রাজ্যের ভবিষ্যৎ সংরক্ষণ নীতি এখন সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে নির্ভর করছে।

আরও পড়ুন

আপনার এলাকায় নতুন ব্যবসা! দৈনিক আয় ₹৫,০০০ টাকা, এখনই শুরু করুন - Tiny House Business Idea

Leave a Comment

error: Content is protected !!