WB SC Cast Certificate Update: রাজ্য সরকার এবার তফসিলি জাতিভুক্ত (Scheduled Caste) নাগরিকদের জন্য শংসাপত্র নিয়ে দারুণ সুসংবাদ জানানো। এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আয়োজিত এক প্রশাসনিক বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আর SC সংশয় পত্র নিতে কোনো রকন বড় পদ্ধতি বা ডকুমেন্টস দরকার পড়বেনা। আরও বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন মাননীয়া।
আগের জটিল নিয়মে ছিল সমস্যার পাহাড়
এতদিন পর্যন্ত SC শংসাপত্র পেতে হলে আবেদনকারীর মা ও বাবা – উভয়ের মধ্যে একজনের শংসাপত্র থাকা আবশ্যক ছিল না। বরং রক্তসম্পর্কে থাকা দুইজনের এসসি শংসাপত্র দেখালে হয়ে যেত, যা অনেক সময়েই দুষ্কর হয়ে দাড়াতো। বিশেষ করে যেসব পরিবারে পুরনো প্রজন্মের কারো শংসাপত্র না থাকত বা যারা গ্রামীণ বা অশিক্ষিত পরিবেশে বসবাস করে থাকেন, তারা এই বাধ্যবাধকতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন।
এবার নবান্ন সূত্রে খবর, এই জটিলতাকেই দূর করতেই রাজ্য সরকার নতুন নিয়ম প্রস্তাব করে দিয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি মেলায় আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এটি কার্যকরও হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা: যোগ্য মানুষ যেন বঞ্চিত না হন
এই নিয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “অনেক সময় প্রকৃত উপযুক্ত মানুষ শুধুমাত্র কাগজপত্রের জটিলতার কারণে সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। তিনি জানান, এটা যেন আর না হয়, তাই এই সিদ্ধান্ত আনা হচ্ছে।” তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, “কোনওভাবেই যেন অযোগ্য কেউ এই ব্যবস্থার সুযোগ না পায়। তাই নজরদারি ও যাচাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা দরকার।”
বিরোধীদের অভিযোগ: ভোট ব্যাংককে খুশি করতে এই উদ্যোগ
এদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই নতুন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি জানান, “আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়মে শিথিলতা আনতে চলেছে। এর মাধ্যমে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ভোট নিশ্চিত করতেই এই কৌশল নিয়েছেন তিনি।” তিনি আরও দাবি, এর ফলে ভুয়ো শংসাপত্রের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং প্রকৃত উপকারভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
তবে এদিকে রাজ্য সরকারের মতে, এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণরূপে সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়েছে এবং এটি কোনওরকম রাজনৈতিক কৌশল হবে না। বরং এটি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার এক প্রয়াস মাত্র ।
মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের উন্নয়ন পরিকল্পনাও সামনে এল
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘ নেত্রী মমতাবালা ঠাকুরও। তিনি মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাজকে আরও সক্রিয় করতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।এর পাশাপাশি বাগদায় বি আর অম্বেডকরের নামে তৈরি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল দ্রুত চালু করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও মালদহে বসবাসকারী মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্বাস্তুদের জমির পাট্টা প্রদান সংক্রান্ত সমস্যার কথাও তুলে ধরেন এইদিন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী এই দাবিগুলির গুরুত্ব বুঝে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দিয়ে থাকেন।
মনে রাখা দরকার :
রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে তফসিলি সম্প্রদায়ের বহু মানুষের দীর্ঘদিনের দাবিরই প্রতিফলন হতে চলেছে। এই প্রক্রিয়া সহজ হলে যোগ্য অনেক মানুষ সরকারি সুবিধার আওতায় আসতে পারবেন, যা সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠার পথে বড় পদক্ষেপ হতে পারে। তবে এর সাথে সাথেই প্রয়োজন কঠোর যাচাই ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, যাতে করে প্রকৃত সুবিধাপ্রাপ্তির পথে কোনও অসৎ চক্রান্ত না ঘটে থাকে।
তবে নতুন নিয়ম বাস্তবায়নের পরে এর ফল কতটা ইতিবাচক হবে, তা ভবিষ্যতেই জানা যাবে। আপাতত সামাজিক ন্যায়ের পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলেই মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।

NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.