Work From Home: বর্তমান সময়ে অনেকের অবস্থা এমন রয়েছে, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি নয়, কিন্তু সংসারের দায়-দায়িত্ব অনেক বেশি। ঘরের খরচ, সন্তানের পড়াশোনা, পরিবার চালানো সহ অন্যান্য খরচ – সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক চাপে পড়তে হচ্ছে অনেককে। তবে আজকের ডিজিটাল যুগে এমন কিছু সুযোগ এসেছে, যেখানে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতি থাকলেও ঘরে বসে মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকার বেশি ইনকাম করা সম্ভব। নিচে তেমনই কিছু জনপ্রিয় ও বাস্তবসম্মত পদ্ধতি তুলে ধরা হলো যার মাধ্যমে সহজেই ইনকাম করা যাবে –
রিসেলিং: মোবাইল দিয়েই ব্যবসা, বিনিয়োগ ছাড়াই আয়
বর্তমানে রিসেলিং (Reselling) হল ঘরে বসে ব্যবসার খুব সহজ এবং নিরাপদ পদ্ধতি। এই মডেলে, কোনও দোকান বা অনলাইন সাইট থেকে পণ্য কিনে নিজের পরিচিতদের মধ্যে বিক্রি করতে পারেন।
বিশেষ করে Meesho, Shop101 বা Glowroad অ্যাপের মাধ্যমে মহিলারা জামাকাপড়, জুতো, ব্যাগ, কসমেটিকস ইত্যাদি রিসেল করে থাকেন। শুধু হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেই পণ্য প্রদর্শন করে অর্ডার নেওয়া সম্ভব। প্রতি বিক্রয়ে ভালো লাভ পাওয়া যায় এবং ধীরে ধীরে কাস্টমার বাড়লে আয়ও বাড়তে থাকে।
ঘরে বসেই আর্চিফিশিয়াল গয়নার ব্যবসা
বর্তমানে অনেক মহিলা ঘরে বসেই হোমমেড জুয়েলারি বিক্রি করে মাসে ২৫-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। ছোট ইনভেস্টমেন্টে শুরু করে, গয়না কিনে হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস বা ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে আপলোড করেই ক্রেতা পাওয়া সম্ভব এবং বিক্রয় করে ভালো আয় সম্ভব।
এই ব্যবসার সবচেয়ে বড় ভালো দিক হল, গয়নার চাহিদা সবসময় থেকে থাকে কিন্তু পুজো বা বিয়ের মরশুমে বেশি থাকে। প্রতিনিয়ত নতুন ডিজাইন, কম দামে ভালো কোয়ালিটির পণ্য দিলে ক্রেতা নিজের থেকেই ফিরে আসতে বাধ্য হবে। অনেকে ইনস্টাগ্রাম পেজ খুলে প্রফেশনাল ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করছেন নিজেদের।
রাজপুতী সুট ও শাড়ির চাহিদা
এদিকে প্রচলিত ট্র্যাডিশনাল পোশাক যেমন রাজপুতী সুট বা চন্দেরি শাড়ির চাহিদা গ্রামে ও শহর দুই জায়গাতেই অত্যন্ত বেশি থাকে। মহিলারা শুধুমাত্র প্রোডাক্টের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেই অর্ডার নিয়ে থাকেন।
বিশেষ করে রাজস্থান, গুজরাট, উত্তর ভারত কিংবা বাঙালি মহিলাদের মধ্যেও এসবের বেশি চাহিদা থাকে। অর্ডার পেলে হোলসেল মার্কেট থেকে পণ্য কিনে কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিলেই টাকা হাতে আসবে।
কসমেটিক্স বিক্রি করেও সম্ভব বড় আয়
বর্তমান সময়ে মেকআপ প্রোডাক্ট বা স্কিনকেয়ার সামগ্রী বিক্রি করেও একটি লাভজনক রিসেলিং ব্যবসা করতে পারেন। মেয়েদের কাছে কসমেটিকসের চাহিদা সর্বকালেই থেকে থাকে। মহিলারা লোকাল মার্কেট বা হোলসেল থেকে পণ্য নিয়ে ফেসবুক লাইভ বাইনস্টাগ্রাম রিলস কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিক্রি করতে পারেন।
একবার পণ্য পছন্দ হলে ক্রেতা বারবার কিনতে থাকবে। এই রকম ব্যবসায় লোকাল অথেন্টিক ব্র্যান্ডের কসমেটিকস বিক্রি করে অনেকেই ভালো আয় করছেন।
কত টাকা আয় হতে পারে? দেখে নিন আনুমানিক হিসাব
নিচের তালিকায় জনপ্রিয় কাজগুলো থেকে সম্ভাব্য আয় কত হতে পারে, তা তুলে ধরা হল:
কাজের ধরন | শুরুতে আয় | ৬ মাস পরে সম্ভাব্য আয় |
---|---|---|
Meesho রিসেলিং | ₹১০,০০০ | ₹৩০,০০০ – ₹৩৫,০০০ |
আর্টিফিশিয়াল গয়না বিক্রি | ₹১২,০০০ | ₹২৫,০০০ – ₹৪০,০০০ |
রাজপুতী সুট/শাড়ি বিক্রি | ₹১৫,০০০ | ₹৩৫,০০০ – ₹৪৫,০০০ |
কসমেটিকস রিসেলিং | ₹৮,০০০ | ₹২০,০০০ – ₹৩০,০০০ |
উল্লেখ্য, উপরের হিসাব আনুমানিক করা হয়েছে। কত আয় হবে, তা নির্ভর করবে তার পরিশ্রম, মার্কেটিং, কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট ও প্রোডাক্ট সিলেকশনের উপর ভিত্তি করে।
এই কাজগুলো কেন মহিলাদের জন্য উপযুক্ত?
- অফিসে না গিয়ে ঘরে বসে করা সম্ভব ।
- বাচ্চা ও পরিবারের দেখাশোনার সঙ্গে ব্যালান্স রাখা সম্ভব ।
- কম বিনিয়োগে শুরু করা যায় এই ব্যবসাগুলি।
- কোনও প্রফেশনাল ডিগ্রি লাগে না এক্ষেত্রে।
- নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করার স্বাধীনতা থাকে।
এই কাজগুলো শুধু মহিলাদের শুধুমাত্র উপার্জনের স্বাধীনতাই দেয় না, আত্মবিশ্বাস এবং পরিচয় তৈরি করতেও সাহায্য করে থাকে।তবে কোনো পুরুষ যদি মহিলাদের নিয়ে এই কাজ শুরু করে তাহলেও ভালো সাফল্য পেতে পারেন।
আপনি কম শিক্ষিত হন কিংবা গৃহবধূ, একটু উদ্যোগ আর নিয়মিত পরিশ্রম করলে এখন ঘরে বসেই আয় করা অসম্ভব কিছু নয়। মোবাইল, ইন্টারনেট আর সোশ্যাল মিডিয়া – এই তিনটি থাকলেই মহিলারা আজ নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারেন সহজেই। কিংবা আপনি পুরুষ হয়ে কয়েক মহিলাকে কাজে লাগিয়ে ভালো আয় করতে পারেন।
যদিও এই কাজগুলো কারও কাছে ছোট মনে হয়, কিন্তু বাস্তবে বহু মহিলা এখন ৪০,০০০ টাকা বা তার বেশি ইনকাম করছেন তাও আবার ঘরে বসে। আপনার যদি এই ধরনের কোনও ব্যবসায় শুরু করার আগ্রহ থাকে, তাহলে আজই প্ল্যানিং শুরু করতে পারেন।

NJ Team Writes content for 5 years. I have well experience in writing content in different niches. Please follow us regularly for getting genuine and authentic information.